Wednesday, November 25, 2015

সৃজনশীল প্রশ্ন কাকে বলে? সৃজনশীল প্রশ্নের বৈশিষ্টগুলী লিখুন।

প্রশ্নের সূচনাপর্বে বিশেষধর্মী উদ্দীপক ব্যবহার করে সব ধরনের শিক্ষার্থীর শিখনের বিভিন্ন দক্ষতা যাচায়ের লক্ষে যে সৃজনশীল কাঠামো তৈরি হয় তাকে কাঠামোবদ্ধ / সৃজনশীল প্রশ্ন বলা হয়। কাঠামোবদ্ধ / সৃজনশীল প্রশ্নের গঠন বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
·   কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন / সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক হলো একটি লিখিত ও চিন্তনধর্মী বিষয়বস্তু।
·   এটি একটি সারণী বা ছবি সদৃশ যা পাঠক কে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে।
·   এ ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে শিখনের সব গুলো স্তর যাচায় করা যায়।
·   এটি শিক্ষার্থীর ভাবনাকে মূর্ত করে তোলে।
·   সব ধরনের শিক্ষার্থী তাদের মেধা অনুযায়ী প্রশ্নের উত্তর করতে পারে।
·   প্রশ্নগুলো সহজ থেকে কঠিন দক্ষতার মান অনুযায়ী সাজানো থাকে।
·   এতে ৩/৪ টি প্রশ্ন থাকে।
·   নম্বর নির্দিষ্ট থাকে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী।

Monday, November 16, 2015

ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতিকে অধিকতর কার্যকর করার উপায় সমুহ লিখুন।

উত্তরঃ ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতিকে অধিকতর কার্যকর করার উপায় সমুহ নিম্নরূপঃ
Ø  শিক্ষাক্ষেত্রে ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতির সফল প্রয়োগের জন্যে প্রয়োজন অনুসারে কখনও ব্যক্তিগত এবং কখনও দলগত ভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।
Ø  বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট সমস্যাকে কয়েকটি অংশে পৃথক করে নিতে হবে।
Ø  প্রতিটি দলের জন্য পৃথক পৃথক সমস্যা নির্বাচন ও নির্ধারণ করতে হবে।
Ø  শিক্ষার্থীদের নিকট হতে প্রাপ্ত সকল মতামতকে প্রাথমিক ভাবে বাছাই করতে হবে।
Ø  প্রাপ্ত তথ্য যাতে চুড়ান্ত বাছায়ের সময় বাদ না পড়ে সে জন্য সকলের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে নির্দিষ্ট ফাইলে রাখতে হবে।
Ø  কেউ ভুল বক্তব্য দিলে তাকে উপহাস করা যাবে না।
Ø  দলীয় চিন্তা ভাবনা উপস্থাপনের জন্য পোস্টার পেপার ব্যবহার করা যায়।
Ø  একটি দলের জন্য নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান সম্বলিত পোস্টার অন্য দলের শিক্ষার্থীদের দেখানো উচিৎ।
Ø  একটি দলের লিখিত মতামতের সাথে অন্য দলের মতামতকে মিলিয়ে সমস্যা সমাধানের পথে দ্রুত পৌঁছার চেষ্টা করতে হবে।
Ø  সমাধান সম্বলিতে প্রাপ্ত পোস্টার পেপার দেয়ালে টানানো এবং দলভিত্তিক উপস্থাপনের ব্যবস্থা করা যায়।
সর্বোপরি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।


আবশ্যকিয়

ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতি কী? ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাগুলো লিখ।

ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতিঃ শ্রেণি পাঠদানে ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি ছোট ছোট দলে ভাগ করে তাদের সামনে কোন নির্দিষ্ট সমস্যা উপস্থাপন করা হয় তাদের কে এই সমস্যা সমাধানের উপায় খুজে বের করতে বলাহয় এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে তাদের মতামত প্রদানের সুযোগ পায় পারস্পরিক গভীর চিন্তার মাধ্যমে জটিল সমস্যা সমাধানে এটি একটি উৎকৃষ্ট কার্যকর পদ্ধতি  পদ্ধতিতে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে অভিজ্ঞতার বুদ্ধিমত্তার বিনিময় ঘটে বলে সমস্যার সুষ্ঠ সমাধান সম্ভব হয়
 এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করে এবং মুক্ত চিন্তার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়। পারস্পরিক মত বিনিময় ঘটায়, পরস্পরের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাছাড়া এতে প্রানবন্ত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলোচনা ফলোপ্রসু হয়। ফলে সমস্যাটির সুষ্ঠু সমাধান বেরিয়ে আসে।

ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতির সুবিধাঃ 
  • সমগ্র শ্রেণিতে একই সময়ে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়
  • জটিল সমস্যা সমাধানের জন্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা সম্ভব
  • সকল শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করতে পারে।
  • অল্প সময়ে অধিক ফল পাওয়া যায়। 
  • পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাওয়া যায়। 
  • অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে শিক্ষকের ধারণা স্পষ্ট হয় এবং সে আলোকে পাঠদান কর্মসূচি বেছে নিতে পারে।
  • শিক্ষক শিক্ষার্থীর পারস্পরিক আলোচনা সহজ, সুন্দর ও স্পষ্ট হয় এবং শিক্ষার্থীরা শ্রেণিপাঠে অধিক প্রানবন্ত থাকে। 
  • শ্রেণির জন্য বরাদ্যকৃত সময়ের পরিপূর্ন ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
  • নিজস্ব চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগকরে সমস্যা সমাধান করতে হয় বলে শিক্ষার্থীরা সার্বক্ষনিক সৃষ্টিশীল চিন্তায় উজ্জীবিত থাকে।
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হয়।
ব্রেইন স্টর্মিং পদ্ধতির অসুবিধাঃ
  • পদ্ধতিতে আলোচনা অনেক সময় নির্দিষ্ট বিষয়ের বাইরে চলে যেতে পারে
  • নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না
  • বিষয়বস্তু সম্পর্কে সঠিক ধারনা না থাকলে সকল ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায় না
  • অংশগ্রহনকারীর সংখ্যা অধিক হলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে
  • শিক্ষার্থীদের মতামত সংরক্ষনে প্রশিক্ষককে যথেষ্ট সক্রিয় হতে হয় যাতে কোন মতামত বাদ না পরে।

মূল্যবোধের প্রকারভেদ উল্লেখ করে যে-কোন দুটির বর্ণনা করুন।

উত্তরঃ শিক্ষাবিদগণ মনে করেন শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অন্ততঃ ছয় ধরনের মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। যেমন- ১) অর্থনৈতিক মূল্যবোধ
২) শারীরিক ও বিনোদন মূলক মূল্যবোধ
৩) সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ
৪) সৌন্দর্য়ের মূল্যবোধ
৫) বৌদ্ধিক মূল্যবোধ

৬) ধর্মীয় মূল্যবোধ।

“বিশ্বাস ও মূল্যবোধ অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত”- উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করুন।

উত্তরঃ বিশ্বাস ও মূল্যবোধ অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িতঃ বিশ্বাসের ভিত্তির উপর গড়ে উঠে মূল্যবোধের কাঠামো। মানুষ তার বিশ্বাসের ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করে। জীবনের প্রতিটি স্তরে বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটাতে মূল্যবোধকে প্রয়োগ করে। যেমন একজন ব্যক্তি মানবিকতায় বিশ্বাসী। তিনি জীবজগতের প্রতি সবসময় সহানুভূতিশীল। এখানে তার বিশ্বাস তাকে মানবিক আচরন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। সে কারনে তিনি মানবিক আচরনকে গুরুত্ব দেন বা মূল্য দেন। এটাই তার মূল্যবোধ। শিক্ষকের জন্য বিশ্বাস হচ্ছে, “নিজেই চিন্তা ভাবনা করে প্রতিনিয়ত শ্রেণীকক্ষের ভিতরে ও বাইরে কমিউনিটির বিভিন্ন পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা

এই বিশ্বাস শিক্ষক একদিনে অর্জন করে না, শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করার পর থেকেই তিনি ভেবে অস্থির হতে থাকেন শিক্ষকতা কার্যাবলির মধ্যে তিনি কি কি নতুন বিশ্বাস/মূল্যবোধ সংযোজন করবে।

এই পেশায় নিয়োজিত হয়ে তিনি ধীরে ধীরে নতুন ধারনকৃত বিশ্বাসসমুহকে পরিমার্জিত করেন, যুগোপযোগী ধনাত্বক বিশ্বাস সংযোজন করেন বা পুরাতন বিশ্বাসসমুহকে পরিবর্তিত আকারে ধারন করেন।

শুধু বিশ্বাস থাকলেই হবে না তাকে কিছু প্রয়োজনীয় মূল্যবোধ অনুসরন করতে হয়।

শিক্ষক শ্রেনীকক্ষে শিক্ষন-শিখনে নিজস্ব ব্যক্তি সত্ত্বার কতখানি “ কমিউনিটি বা দলের জন্য প্রয়োজনীয় মূল্যবোধ হিসেবে সম্পৃক্ত করতে পারবেন তার উপরই তাঁর সাফল্য নির্ভর করবে।

শিক্ষকের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের ধনাত্বক প্রতিফলনের মাধ্যমে তার শিক্ষনের সার্থকতা সমাজে স্পষ্টরূপে ধরা পড়বে। অর্থাৎ বিশ্বাস ও মূল্যবোধ অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। এর একটিকে বাদ দিয়ে কখনই পরিপূর্ণতা আশা করা যায় না। উদাহরণ সমুপ বলতে পারি, আমরা বিশ্বাস করি যে চুরি করা, ঘুষ খাওয়া, অন্যায়-অবিচার করা, কারও মনে দুঃখ দেওয়া, কারও হক নষ্ট করা, কারও ক্ষতি করা প্রভৃতি বহুবিধ কাজ আছে যেগুলো খারাপ। কিন্ত এই বিশ্বাসকে মূল্যবোধ হিসেবে না নেয়া অর্থাৎ আমরা যদি নিজের জীবনে তা অনুসরন না করি বা অনুসরন করার প্রযোজন বোধ না করি তবে এই বিশ্বাস অর্থহীন হবে।

একজন শিক্ষক হিসেবে আপনার আচরন ও প্রবণতায় বিশ্বাস ও মূল্যবোধ আপনার উপর কী কী প্রভাব ফেলতে পারে-আলোচনা করুন।

উত্তরঃ আচরন ও প্রবণতায় বিশ্বাসের প্রভাবঃ
·         বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব।
·         শিক্ষকের আচরন নিয়ন্ত্রন করার কৌশল অনুশীলন।
·         শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক ও সহানুভূতিশীলতা।
·         বন্ধুসুলভ আচরণ।
·         ভয় দেখানো ও শাস্তি দেয়া থেকে বিরত থাকা।
·         শ্রেণিকক্ষে সকল শিক্ষার্থীর প্রতি সমান দৃষ্টি রাখা।
·         একটি সুস্থ সুরক্ষামূলক একীভূত ও শিখন বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা।

আচরন ও প্রবণতায় মূল্যবোধের প্রভাবঃ
·         যৌনশিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতনতার জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও জনগোষ্ঠির সহায়তার মনোভাব ইতিবাচক হওয়া।
·         স্বাক্ষরতা দিবস, আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস ইত্যাদি দিবস পালন ও অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে শিক্ষার্থীদের এগুলোর তাৎপর্য তুলে ধরার মানসিকতা থাকা।
·         বিদ্যলয়ে শিক্ষণ কাজে অভিভাবক ও জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিদের সহায়তার মনোভাব থাকা।

·         দুরযোগ মোকাবেলার প্রস্তুতির ইতিবাচক মনোভাব থাকা।

Thursday, November 5, 2015

বিশ্বাস ও মূল্যবোধের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করুন।

উত্তরঃ বিশ্বাস শব্দটির অর্থ অনেক গভীর বিশ্বাস মানুষের মনের একটি বিমূর্ত ভাবনা জন্মলগ্ন থেকে মানুষ যা দেখে, যা শোনে, যা বোঝে এবং যা থেকে তার ধারনা নেয় তা থেকেই তার আদর্শ গড়ে ওঠে আদর্শ মানুষকে বিশ্বাস গড়ে তুলতে অনুপ্রানিত করে দৈনন্দিন কর্মজীবনে মানুষ প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে পরিচিত হয়, আদান প্রদান করে, সুবিধা ভোগ করে বা করতে পারে এসব থেকে সে উপাদানের উপর আস্থা রাখতে পারে আস্থা বিশ্বাসের জন্ম দেয় অর্থাৎ ব্যক্তি যখন কোন কিছুর উপর নির্ভর করে , যা তাকে সহজ জীবন দিতে পারে বা তার আশা প্রত্যাসাকে বাস্তবায়িত করতে পারে তখনই সেই বস্তু বা ধারনা বা আদর্শ বা কৌশলের উপর তার বিশ্বাস জন্ম নেয় সে উপাদানের উপর ভরসা করে বা বিশ্বাস রাখে এভাবে মানুষ কোন আদর্শ বা নিয়ম বা রীতির বিশ্বাসী হয়ে ওঠে তখন ঐসব নিয়ম নীতি বা কর্মপ্রেরনার উৎসকে আমরা ব্যক্তির বিশ্বাস বলি বিশ্বাস থেকে ব্যক্তির নৈতিকতার সৃষ্টি হয় মানুষ যদি তার কর্মে নিজের বিশ্বাসের প্রতিফলন প্রতিফলন ঘটাতে পারে সে উৎসাহী হয় এবং যদি না পারে, সে হতাস হয

যেমনঃ মনেকরি একজন ব্যক্তি সততায় বিশ্বাসী কিন্ত তিনি সত্যি কথা বললেই বিপদে পরেন, এমন যদি হয় পরিস্তিতি তখন তার আত্মবিশ্বাসে ফাটল ধরে এবং দিনে দিনে তিনি হতাস হয়ে পরেন

সুতরাং মানুষের মধ্যে শুধু বিশ্বাস গড়ে তুললেই হবে না, সমাজে তা প্রতিফলনের সুযোগ থাকা চাই

মানুষের বিশ্বাস সমূহ তার মৌলিক সত্ত্বায় অবস্থান করে বিষয় গুলো আমরা মানুষের মধ্যে সাধারনত এভাবে দেখতে পাই, যেমন - মৌলিক ধারনা, শ্রদ্ধাবোধ, আচরন, গবেষণা তত্ত্ব, ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব, কর্মসহায়ক গবেষণা, অনুশীলন, ব্যবহারিক জ্ঞান, পরীক্ষালব্ধ জ্ঞান যা মানুষ বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জন করে এবং সন্তষ্ট হয়

বিশ্বাসের উৎপত্তি হয় ব্যক্তির মানসিক সংগঠন থেকে যেমন- একজন প্রশিক্ষনার্থী বি এড ডিগ্রী অর্জন করার সাথে সাথে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কল্যানমুখী সৃজনশীল শিখনের জন্য শিক্ষন পরিচালনায় উদ্বুদ্ধ হন উদ্দেশে তিনি তার চিন্তা চেতনায়, কাজে-কর্মে সর্বত্র শিক্ষার্থীর ইতিবাচক শিখন সংক্রান্ত যাবতিয় বিশ্বাস প্রয়োগ করতে থাকেন এখানে বি এড শিক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি যখন সক্রিয় অংশগ্রহন করেছিলেন তখন বিষয়বস্তু, শিক্ষার পরিবেশ, পারস্পরিক মিখষ্ক্রিয়া ইত্যাদি সবকিছুই তার মানসিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ন উপাদান হিসেবে কাজ করেছে ফলে শিক্ষার্থীর কল্যানমূখী শিক্ষনের প্রতি তিনি ধীরে ধীরে মানসিক ভাবে প্রস্তুত হয়েছেন কারন তার বিশ্বাস এভাবে গড়ে উঠেছে সুতরাং দেখা যায় ব্যক্তির বিশ্বাস তার জীবন পরিচালনায় দৃষ্টি ভঙ্গি গঠনে গভীর ভাবে প্রভাব বিস্তার করে

বিশ্বাসের সাথে মানুষের আধ্যাতিক চেতনা, নীতিবোধ, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ঐতিহ্যগত এবং যৌক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি জড়িত একজন শিক্ষকের বিশ্বাস তার পেশাগত কাজে তাকে অনুপ্রেরনা যোগায় কারনে ইতিবাচক বিশ্বাস দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা শিক্ষকের জন্য অপরিহার্য কারন বিশ্বাসই তার পেশাগত জীবনের পাথেয় হয়ে থাকে

বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে কোন কাজ করলে সে কাজের কর্মমূল্য বহুগুন বৃদ্ধি পায় কারন সে কাজের মধ্যদিয়ে ব্যক্তির ব্যক্তিসত্ত্বার বিকাশ ঘটে ফলে ব্যক্তি সেখানে স্বীকৃতি পায়, কর্মপরিচালনা হয়ে উঠে তখন আনন্দদায়ক, সহজ অর্থপূর্ণ

বিশ্বাসের ভিত্তির উপর গড়ে উঠে মূল্যবোধের কাঠামোমানুষ তার বিশ্বাসের ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করে জীবনের প্রতিটি স্তরে বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটাতে মূল্যবোধকে প্রয়োগ করে যেমন একজন ব্যক্তি মানবিকতায় বিশ্বাসী তিনি জীবজগতের প্রতি সবসময় সহানুভূতিশীল এখানে তার বিশ্বাস তাকে মানবিক আচরন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে সে কারনে তিনি মানবিক আচরনকে গুরুত্ব দেন বা মূল্য দেন এটাই তার মূল্যবোধ মূল্যবোধ ব্যক্তির শক্তি বা ক্ষমতা যার গুনে সে নিজের বৈশিষ্টকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে এবং যা সে চায় তাই অন্যের মধ্যে বিকশিত করতে পারে শিক্ষাক্ষেত্রে মূল্যবোধের বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয় বিষয়বস্তু, শিক্ষকের গুনাবলী, শিখন পরিবেশ এসব উপাদান শিক্ষার্থীর বিশ্বাস গঠনে প্রভাব বিস্তার করে বিদ্যালয়ে যে বিশ্বাস সে অর্জন করব, তার উপর তার মূল্যবোধ গড়ে উঠবে যে ব্যক্তি ইতিবাচক বা কল্যানকর গুনাবলীকে মূল্য দেন তিনি শিক্ষক হওয়ার যোগ্য কারন তার মূল্যবোধ দর্শন দ্বারা তিনি শিক্ষার্থীদের প্রভাবান্বিত করতে পারেন

মূল্যবোধ জাতীয়দর্শন এবং শিক্ষা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ এটি জীবনকে সঠিক ভাবে পরিচালিত করার নীতিমালা বা সার্বিক উন্নয়নের সহায়ক শক্তি আধুনিক ধারনা অনুযায়ী মূল্যবোধ হলো কতগুলো জৈব মানসিক সংগঠনের এমন এক সমন্বয় যা পরিবেশের বহু অংশকে সক্রিয়তার দিক থেকে সমগুন সম্পন্ন করে তোলে এবং ব্যক্তির মধ্যে উপযুক্ত আচরন সৃষ্টি করে ধারনাটিকে বিশ্লেষন করলে দেখা যায় পরিবেশ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের জৈব মানসিক প্রবনতা যা সাধারন ধর্মী সামন্ঞ্জস্য পূর্ন আচরন সৃষ্টি করে তাকে মূল্যবোধ বলা হয়


একজন শিক্ষক শুধু বিষয়বস্তু শিক্ষনই দেন না, তিনি শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করেন, শ্রেনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রন করেন, শিক্ষার্থীর যে কোন ধরনের সমস্যায় নির্দেশনা দেন, এমনকি তার সাথে শিক্ষকের টাকা-পয়সা লেনদেনও করতে হয় প্রতিক্ষেত্রে শিক্ষকের আচরন শিক্ষার্থীকে প্রভাবান্বিত করে উন্নত আর্দশ ব্যক্তি তথা জাতি গঠন শিক্ষার লক্ষ সুতরাং লক্ষ সামনে রেখে একজন শিক্ষক নিজ বৈশিষ্টে যথার্থ মূল্যবোধ গড়ে তুলবেন যেন সমাজে প্রত্যাশিত সমগুনসম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে তিনি সক্ষম হন